Skip to main content

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই

বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোনোই ভবিষ্যৎ নেই বলে মন্তব্য করেছেন রোহিঙ্গা বিষয়ক আইনজীবী রাজিয়া সুলতানা। তিনি এই আশ্রয়শিবিরকে চিড়িয়াখানার সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য একটি উপযুক্ত কৌশল নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন। কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ওমেন অব কারেজ এওয়ার্ড (আইডব্লিউসিএ) পুরস্কার পান রাজিয়া সুলতানা। সাহসিকতা দেখানোর জন্য সারা বিশ্ব থেকে বাছাই করা ১০ জন নারীকে এ পুরস্কার দেয়া হয়। 

রাজিয়া সুলতানার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তাতে তিনি রোহিঙ্গাদের পরিণতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। রাজিয়া সুলতানা বলেন, মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে আশার অভাব রয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের ফলে তারা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।


রাজিয়া সুলতানা বলেন, এই আশ্রয় শিবিরে যত বেশি সময় শরণার্থীরা থাকবেন ততই পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকবে। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, হ্যাঁ, এ কথা সত্য যে, শরণার্থীরা খাবার পাচ্ছে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। এটা তো একটি চিড়িয়াখানার মতো, যেখানে মানুষগুলো শুধু খাবার পাচ্ছে এবং বড় হচ্ছে। তাদের কোনো শিক্ষা নেই। নেই কোনো ভবিষ্যৎ। 

উল্লেখ্য, রাজিয়া সুলতানা নিজেও একজন রোহিঙ্গা। তার জন্ম মিয়ানমারে। তবে তিনি বেড়ে উঠেছেন বাংলাদেশে। ২০১৬ সালে একই রকম সহিংসতায় অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। তার মধ্যে মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হওয়া কয়েক শ’ নারীর সাক্ষাৎকার নেন তিনি। এরপর প্রতিষ্ঠা করেন রোহিঙ্গা ওমেনস ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। ২০১৭ সালে যেসব নারী বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে এসেছেন তাদেরকে কাউন্সেলিং বা পরামর্শ দেয়া হয় এখান থেকে। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ে গৃহ নির্যাতন ও বাল্যবিবাহের মতো সমস্যা মোকাবিলার জন্য এ সংগঠনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবীদের। 

এ বিষয়ে রাজিয়া সুলতানা বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের একটু সুযোগ ও একটু নিরাপত্তা দিন। তারা আপনাকে বিস্মিত করবেন। যখন আমি কাজ শুরু করেছিলাম তখন এই কর্মসূচির আওতায় খুব করে হলেও পাঁচজন মেয়েকে আশ্বস্ত করে আনতে পেরেছিলাম। এখন আমাদের আছেন ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবী। তারা বিস্ময়কর সব কাজ করছেন। আশ্রয় শিবিরে বাল্যবিবাহ, গৃহনির্যাতন ও পাচারের ঝুঁকির বিষয়ে তারা আমাকে অবহিত করেন। 

ওদিকে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করেছেন। তারা বলেছেন, মিয়ানমারে গণহত্যার উদ্দেশে ধর্ষণ  চালানো হয়েছে নৃশংসতার সময়ে। ফলে ২০১৭ সালে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা তাদের বাড়িঘর, দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তবে মিয়ানমার এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে। তারা বলছে, সন্ত্রাসী হুমকির প্রেক্ষিতে তারা আইনসম্মতভাবে রাখাইনে অভিযান পরিচালনা করেছে এবং শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে চায়। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি করা হয়নি। 
আর রোহিঙ্গারা চাইছেন তাদের নিরাপত্তা, নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা। কারণ, তারা রাষ্ট্রহীন। তাদের ভোটাধিকার নেই। নেই অন্যান্য অধিকারও। 

এ অবস্থায় রাজিয়া সুলতানা বলেছেন, আশ্রয়শিবিরে  রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশায় ঘাতটি দেখা দিয়েছে এবং এর ফলে পাচারের ঝুঁকি বেড়ে গেছে এরই মধ্যে। এ সমস্যার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে তিনি বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পুলিশের রেকর্ডে দেখা যায়, শুধু এ বছরই পাচার চেষ্টার সময় শতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। 
রাজিয়া বলেন, পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে কথা বলতে ভয় পান শিবিরে আশ্রয়গ্রহণকারীরা। কারণ, এ তথ্য প্রকাশ করলে তাদেরকে হত্যা করা হতে পারে। তাই তাদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তাই পাচার বন্ধ করা একটি কঠিন বিষয়। 

রাজিয়া আরো বলেন, তার প্রকল্পের পরবর্তী ধাপ হবে ক্যাম্পের যুব সমাজকে তাদের রোহিঙ্গা পরিচয় ফিরে পাওয়ার বিষয়ে সহায়তা করা। এটি একটি বিতর্কিত ইস্যু। কারণ, রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করতে অস্বীকৃতি জানায় মিয়ানমার। 
তিনি বলেন, একজন রোহিঙ্গা হিসেবে আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ স্বীকৃতি পাওয়ার পর এটি এখন আমার কাছে একটি বড় ইস্যু। দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশার বিষয়টি উপেক্ষিত। 

Popular posts from this blog

Amnesty International's T. Kumar to Speak at the Islamic Society of North America's Convention

Amnesty International's T. Kumar to Speak at the Islamic Society of North America's Convention  Advocacy Director T. Kumar to Speak on Rohingya Muslims in Myanmar (Burma)  Contact: Carolyn Lang, clang@aiusa.org, 202-675-8759  /EINPresswire.com/ (Washington, D.C.) -- Amnesty International Advocacy Director T. Kumar will address the Islamic Society of North America's 49th Annual Convention "One Nation Under God: Striving for the Common Good," in regards to the minority community of Rohingya Muslims in Myanmar (Burma) on Saturday, September 1, at 11:30 am at the Washington DC Convention Center. 

Rohingya Activist Nominated for Human Rights Award

PHR congratulates Zaw Min Htut, a Burmese Rohingya activist, on his nomination for the 2011  US State Department Human Rights Defenders Award . Zaw Min Htut has been working for Rohingyas’ rights through the Burmese Rohingya Association of Japan since he fled Burma in 1998. Prior to that he was a student activist in Burma, and was detained for his participation in protests in 1996. In Japan, Zaw Min Htut has organized protests at the Burmese embassy and has written books on the history of Rohingya.

American Buddhists Promote 969 Movement With Website

Irrawaddy News: July 9, 2013 A group of American Buddhists has launched an English-language website promoting the 969 movement, in response to negative media surrounding the ultra-nationalist Buddhist campaign in Burma. The website aims to dispel “myths” about the movement, with a letter from nationalist monk Wirathu to a Time magazine reporter whose article about 969 was banned in Burma.  “We’re not officially endorsed by Ven Wirathu at this time but will send a delegation to his monastery soon,” a spokesperson for the site said via email, adding that the group would create a nonprofit to coordinate “969 activities worldwide in response to religious oppression.”